ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়ার রাজনীতির রং পাল্টে গেছে

এম.আর.মাহবুব, কক্সবাজার থেকে :::

অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতের কোর্টের রায়ে কক্সবাজারের রাজনীতির প্রাণ পুরুষ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদের খালাসের রায়ে হঠাৎ করে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের রাজনীতির রং বদলে দিয়েছে। এই আসন থেকে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ কখন দেশে আসছেন কিংবা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আদৌ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কিনা-এ প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো চকরিয়া-পেকুয়ার সংসদীয় আসনের জনমনে।

পাশাপাশি সালাহ উদ্দিন আহমদের বেকসুর খালাসের রায়ে চকরিয়া-পেকুয়া বিএনপি পরিবারের নিরব উৎসবের আবহ তৈরী হয়েছে আর সালাহ উদ্দিনের খালাসের রায়ে বিরুদ্ধাচারী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কপালে চিন্তার ভাজ তৈরী হয়েছে। হেভিওয়েট প্রার্থী সালাহ উদ্দিন ভারত থেকে দেশে ঢুকবেন- এবং তাঁর বিরুদ্ধে দেশে থাকা মামলা মোকাবেলা করে জামিন নিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে মাঠে নামবেন- এ স্বপ্নে বিভোর চকরিয়া-পেকুয়ার লাখো বিএনপি তথা সালাহ্ উদ্দিন সমর্থকরা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী চকরিয়া নিউজকে জানান-কক্সবাজারের রাজনীতির অহংবোধ, জাতীয় নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতের কোর্টের রায়ে খালাস পাওয়ার পর সহসা দেশে ফিরতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। দেশে অবাধ রাজনীতি ও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নেই। দেশের মালিকানা ভোটারদের কাছে ফিরিয়ে দিতে দেশের গনতন্ত্রকামী দল গুলো ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে আন্দোলনে আছে। আমি আশা করি দেশে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ ফিরে আসলে অন্য সব প্রার্থীদের মতোই জনপ্রিয় নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ চকরিয়া পেকুয়ায় ভোটের মাঠে নামবেন ইনশাআল্লাহ। এক্ষেত্রে আমি মনে করি ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের করা মিথ্যা মামলা কোন প্রভাব ফেলবেনা। এসব মিথ্যা মামলায় অবশ্যই তিনি জামিন পাবেন এবং ভোটে প্রার্থী হবেন।

ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদকে খালাস দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। একই সঙ্গে তাকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আজ শুক্রবার শিলংয়ের আদালত ফরেনার্স অ্যাক্টের ওই মামলায় সালাহ উদ্দিনকে খালাস দেন।

দীর্ঘ তিন বছর ধরে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে কার্যত বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে ঢোকার অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় তিন বছর ধরে এ মামলা চলে।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমদকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ।

এরপর দুই মাস পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে খোঁজ মেলে সালাহ উদ্দিনের। কিন্তু ভ্রমণের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। কিছুদিন কারাগার ও হাসপাতালে কাটানোর পর স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় জামিনে মুক্তি পান সালাহ উদ্দিন আহমেদ। কিন্তু ভারত ছাড়ার অনুমতি পাননি তিনি। এমন পরিস্থিতিতে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ও কয়েকজন স্বজন নিয়ে শিলংয়ে আছেন তিনি।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বিএনপির ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। পরে কক্সবাজার থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০১-০৬ মেয়াদে চার দলীয় জোট সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন কক্সবাজার কৃতি এই রাজনীতিবিদ ।

পাঠকের মতামত: